ছয়মাস হলো দাড়ি রাখা শুরু করেছে আবিদ। এখন এক মুষ্ঠির চাইতে সামান্য একটু বড়। পুরোপুরি প্র্যাকটিসিং মুসলিম হওয়ার চেষ্টা করছে সে।প্রতিদিন একটু একটু করে নিজেকে সংশোধিত করে নিচ্ছে।
আজ আবিদের ফাইনাল ইয়ারের রেজাল্ট দিবে।সকাল সকাল বাসা থেকে বের হয়ে পড়লো। কেনো জানি আজ রিকশা নিতে ইচ্ছা করছে না।বসন্তের বাতাস গায়ে মেখে হেটে চলার বাসনা থেকেই হয়তো! হাটতে হাটতে অতীতের বিভিন্ন স্মৃতি মাথায় আকিবুকি খেলছে।
অতীত নিয়ে গেলো গত বসন্তে! বাইরে হালকা বাতাস। সময় সকাল ১১ টা বেজে ৩০ মিনিট। আবিদ বেডের পাশের জানালাটা খুলে একমনে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। অদূরে মেহগনি গাছের পাতাগুলো বাতাসে আন্দলিত হচ্ছে।খুব করে ইচ্ছা হচ্ছে আজ সারাদিন জানালার পাশে বসে থাকবে। কিন্ত সম্ভব না। আজ ভার্সিটিতে প্রেজেন্টেশন আছে। সে আবার গ্রুপ লিডার। খুব ভালো উপস্থাপনা করতে পারে। দুপুর ২ টা থেকে প্রেজেন্টেশন শুরু। প্রেজেন্টশন ফাইল গতকালকেই রেডি করে ফেলেছে। নাহ! আর বসে থাকা যাবেনা। ১২ টার দিকে বাসা থেকে বের হলো সে। পাড়ার মোড়েই নিত্যদার সেলুনের দোকান। আবিদের সাথে খুব খাতির। চেয়ারে বসতেই নিত্যদা সুন্দর করে ক্লিন শেভ করে দিলো।তার হাতের কাজের প্রশংসা করতেই হয়। তবে বড় কথা হলো আবিদ নিত্যদার সেলুনেই নিয়মিত যায় শুধুমাত্র আফটার শেইভের টানে। এখানকার আফটার শেইভটা আবিদের খুব পছন্দ।সেলুন থেকে বের হয়েই দ্রুত বাসায় যায় সে। আধা ঘন্টা হাতে থাকতেই পুরো রেডি। শুট টাই পরে বের হয়ে পড়ে ভার্সিটির উদ্দেশ্যে। বসন্তের বাতাসে আফটার শেইভের মনকরা সুবাস চারিদিক ভারী করে তুলেছে। একটু হাটতেই দূর থেকে আহসান তাকে ডাকে। সেও দ্রুত এগিয়ে যায়…
আচ্ছা হঠাৎ করে এ ঘটনা তার মনে পড়লো কেনো! কিছুক্ষণের মধ্যেই সে কারণ খুঁজে পায়। হ্যাঁ সেই সেই মনমাতানো সুঘ্রাণটা সে এখন পাচ্ছে যেটা পেতো নিত্যদার দোকান থেকে বের হয়ে। হ্যাঁ তার পাঞ্জাবী থেকেই আসছে এই ঘ্রাণ। কিন্ত কিভাবে সম্ভব? গত ছয়মাস সে এই ঘ্রাণ একবারো পায়নি। ভাবতে ভাবতে ক্যাম্পাসে পৌঁছে যায় সে। আহসানকে ঘটনাটা বলতেই সে মিটিমিটি হাসে। বলে, পকেট চেক কর। নিজ পকেট থেকে আবিদ একটি আতরের বোতল বের করে। গায়ে লেখা -কুল ওয়াটার। বুঝে যায় গতকাল আহসান প্রেজেন্টেশনে হেল্প করতে এসে এই কাজ করে গেছে। সে যে তার বেস্ট ফ্রেন্ড। তার ভালোলাগা মন্দ লাগা সব জানা।
আবিদ ভাবে… একই ঘ্রাণ, একই সময়। অথচ একটি ছিলো হারামের উপর, আর একটি সুন্নাহর উপর। আহসানকে উচ্ছ্বসিত স্বরে বলে ওঠে জাঝাকাল্লাহু খাইরান।
Reviews
There are no reviews yet.